দান খয়রাত
লেখাঃ রত্না চক্রবর্তী
অলংকরণঃ জয়দীপ বসু
কাজের মেয়ে রাধা কে জামা কাপড় কাচার জন্য বার
করে দিতে দিতে মৌসুমী বলল, "দেখ রাধা, তোকে বলি- ছোটলোকমিটা আমার আসে না
তোর মেজবৌদির মতো। আমার তেমন সংগতি আছে যে দুই হাত তুলে মানুষকে দিতে পারি। রায়
জ্যেঠু মারা গেছেন, আর তাদের অত বড় পরিবারে দিতে গেছে পাঁচশো চাল আর ছোট একটা
মাখনের প্যাকেট, দুটো কাঁচকলা আর একডজন কলা, সাবু আর মাদার ডেয়ারি দুধের
প্যাকেট। এর থেকেই তো পরিচয় পাওয়া যায় মনের! আমি তো দেড় কেজি গোবিন্দভোগ চাল,
পাঁচশো গাওয়া ঘি, আপেল, লেবু, শ্রীদুর্গার মিষ্টি দিয়ে এসেছি। কাঁচকলাফলা আর কেউ
খেতে চায় না। লোক দেখানো দেওয়া আমি দিই না।"
রাধা খুব বুঝদারের মতো ঘাড় নেড়ে বলল, "তা
আর জানিনা বড় বৌদি! এতকাল ধরে তোমায় দেখছি। তোমার মন, তোমার বড় হাতের কথা
পাঁচজনকে বলি। বড়বৌদি, একটা কথা বলি- ছেলের স্কুলের জুতো ছিঁড়ে গেছে, কিনে দিতে
হবে। তুমি আমাকে দুশো টাকা ধার দাও না গো!"
একটু থমকে গেল মৌসুমি। তারপর বলল, "তা বাবা এখন মাসের শেষ, চাইবার আর সময় পাস না? ঠিক আছে, দেব'খনে। কিন্তু মনে রাখিস তুই আগের মাসের কেরোসিন তেল নিয়েছিলি, তার দাম দিস নি। বাজারে দাম বেড়ে গেছে, ওটা চল্লিশ টাকা করে দিস। পরের মাসেও তবে দেব। আগের টাকাটা দিয়ে দিস।"
রাধা ঘাড় নেড়ে হাসল, এক গাল হাসি, কিসের যেন হাসি... তা অবশ্য ঠিক বোঝা গেল না।
Comments
Post a Comment