অসুরবিনাশ

 


লেখাঃ সুনন্দিনী ঘোষ

অলংকরণঃ সুনন্দিনী ঘোষ


"যা চণ্ডী মধুকৈটভাদিদৈত্যদলনী যা মহিষোন্মূলিনী!"

দাদুভাইয়ের কোলের কাছে গুটিসুটি হয়ে বসে ছোট্ট কালো বাক্সটার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল অনীক। আশ্বিনের শেষরাত্রে খুব ঠাণ্ডা না থাকলেও হালকা একটু চাদরের ওম দরকার হয় দাদু নাতি দু'জনেরই। তবে সেই গমগমে উদাত্ত কণ্ঠস্বরের শিহরণ শরীর মনকে ছেয়ে ফেলার মধ্যেই দিবাকরবাবু অনুভব করলেন ছোট্ট ছোট্ট হাতদুটো তাঁর গলা জড়িয়ে কচি গলায় বলে উঠছে, “দাদু, দাদু! আমাকে যুদ্ধ শেখাবে? মা দুগ্গার মতো অসুরকে দুম করে মেরে দেব। আর সবাই তখন বেঁচে যাবে।” 

রিটায়ার্ড মেজর জেনারেল দিবাকর নারায়ণ বসু সস্নেহে অনীকের মাথায় আলতো আশীর্বাদের আঙুল বুলিয়েছিলেন।

কেটে গেছে তেইশটা বছর। দাদুর ছবিতে প্রণাম করে অনীক মনে মনে বলল, “দাদু, আজ আমি প্রস্তুত। যুদ্ধে চলেছি। লড়াই হবে। জিতে ফিরব।”

গলায় স্টেথোস্কোপ, নাকমুখ সার্জিক্যাল মাস্কে ঢাকা, ঝকঝকে চোখে ডঃ অনীক বসু চলে গেলেন কোভিড হাসপাতালে। রজনীগন্ধার ফাঁক দিয়ে দাদুর স্মিত হাসি আলো ছড়িয়ে দিল তাঁর যাত্রাপথে।

Comments