ফিল ইন দ্য ব্ল্যাঙ্ক
অলংকরণঃ সঞ্চিতা রায়
ইজেলস্ট্যান্ডের সামনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছে
সাইমন। ব্রাশে রঙ মাখিয়ে বেশ কয়েকবার কল্পনামিশ্রিত রেখা টেনেও, কিছুতেই মনের মতো
হচ্ছে না ব্যাপারটা! বারংবার ব্যর্থতার দরুণ তার অবচেতন মনের শৈল্পিক কোণে একটু
একটু করে দখল নিচ্ছে রং বিহীন নিঃস্ব ক্যানভাস। তাহলে কি তার জীবন থেকে সব রঙ উবে
গেল!
লাস্ট এক্সিবিশনে তার আঁকা ছবিগুলোর মধ্যে মাত্র
দু'টো ছবি গেস্টদের পছন্দ হয়েছিল, যার একটায় 'নট ফর সেল' ট্যাগ লাগানো ছিল।
আজকাল আকন্ঠ মদ্যপানের কারণেই নাকি সাইমন ম্যাথুর
কালার ম্যাজিক ফুরিয়ে আসছে, এমনটাও কয়েকজনকে কানাঘুঁষো করতে শুনেছে! তবে কি সেটা
সত্যিই?
নাহ! গসিপ, সব গসিপ! এত তাড়াতাড়ি সে ফুরোতেই
পারে না, গুরুজীকে কথা দিয়েছে যে! শূন্য ক্যানভাসকে রঙিন ছোঁয়ায় জিওনরূপ দানের
জন্য সব ত্যাগ করতে পারে সে- প্রেম, সম্পর্ক, বন্ধুত্ব! বন্ধুত্ব? নাহ! সেটা সে
নিজের হাতেই তো...
উঁহু! আসছে না, কিছুতেই মাস্টার স্ট্রোকটা আসছে
না...
ক্লান্তি, অবসাদ যাবতীয় কিছুকে ঝেড়ে ফেলে আবারও
ফাঁকা ক্যানভাসের সামনে দাঁড়িয়ে নতুন উদ্যমে হাতে তুলে নেয় কালার ব্রাশ! ধীরে ধীরে
ক্যানভাসে সেজে ওঠে এতদিন ধরে তার অন্তরে সযত্নে লালিত পাষাণপ্রতিমা! অস্ফূটে
বেরিয়ে আসে একটাই নাম, সুস্যান!
ক্রমাগত ব্রাশের আঁচড়ে পুনরায় ক্ষত-বিক্ষত হতে
থাকে ক্যানভাসে ভেসে থাকা মুখমণ্ডল, চুঁইয়ে পড়া শোনিতরঙে ফুটে ওঠে নিখুঁত বিকৃতির
অবয়ব, ঠিক যেন পাথুরে আঘাতে থেঁতলে দেওয়ার পরবর্তী মুহূর্ত!
স্মৃতির অতলান্তে তলিয়ে যেতে থাকে সাইমন ম্যাথু!
পরেরদিন নিজের আর্ট স্টুডিও থেকে উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ!
তখনও ভেজা ক্যানভাস জুড়ে রয়েছে গভীর আলিঙ্গনে
আবদ্ধ চুম্বনলিপ্ত যুগলের প্রতীকী 'দ্য মাস্টারপিস'।
Comments
Post a Comment